: ইসলামের ৫টি স্তম্ভের মধ্যে রোজা অন্যতম।রোজা রাখা ফরজ। এই ফরজ কাজাটি বেশ কিছু নিয়মের মধ্যে থেকে পালন করতে হয়। সেহরি হলো রোজার অন্যতম একটি অংশ। রোজা রাখার জন্য রাতের শেষদিকে উঠে সেহেরি খাওয়া রসূল (সা.) এর পছন্দনীয় কাজ, তথা সুন্নতে মুস্তাহাব। সেহেরি খাওয়া ফরজ নয়। তাই সেহেরি খেতে না পারলেও রোজা বাদ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। মহান আল্লাহ নিজেই পানাহার করার কথা বলেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘পানাহার কর যে পর্যন্ত প্রত্যুষে কালো রেখা হতে সাদা রেখা প্রকাশ হয়।’ (সুরা বাকারা- ১৮৭ আয়াত। অর্থাৎ সুবেহ সাদেক উদয় হওয়া পর্যন্ত সেহেরি খাওয়ার শেষ সময়।
আরেক হাদিসে আছে, হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, তিনটি জিনিসে বরকত রয়েছে। জামাআতে, সারিদ এবং সেহেরিতে। (তাবারানী)
সেহেরির সময় দোয়া কবুল:
মাহে রমজানে সেহেরির সময় দোয়া কবুল হয়। তাবরানি সংকলিত হাদিস গ্রন্থের একটি হাদিসে উদ্ধৃত হয়েছে, রসুলে করিম (সা.) বলেছেন, রাতের সেহেরির সময় দোয়া কবুল হয়।
তাই সেহেরি উপলক্ষে কেউ যদি এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে তাহলে তো সে সফল ও সার্থক। সেহেরির আগে পরে সামান্য সময়ের জন্য হলেও আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন, আল্লাহ নিশ্চয়ই তার ডাকে সাড়া দেবেন।
রোজা রাখার জন্য স্বয়ং মহানবী (সা.) নিজেই সেহেরি খেতেন, সাহাবিদের সেহেরি খাওয়ার জন্য বলতেন। কখনো সাহাবিদের একসঙ্গে নিয়ে সেহেরি খেতেন এবং জামাতে ফজরের নামাজ আদায় করতেন। সেহেরিতে তাড়াহুড়া করা ঠিক না।
তাড়াতাড়ি খাওয়া উত্তম কাজ নয়। রাসূল (সা.) সেহেরিতে বিলম্বিত করা পছন্দ করতেন, এজন্য তিনি শেষ মুহূর্তে খাওয়ার জন্যও উৎসাহ দিতেন। শেষ সময় পর্যন্ত সেহরি খাওয়ার বিলম্ব করা রাসূল (সা.) এর সুন্নাতও।
হাদিস শরীফে আছে, হযরত যায়দ ইবনে সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সঙ্গে সেহেরি খাই এরপর তিনি সালাতের জন্য দাঁড়ান। বর্ণনাকারী (রাবী) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আযান ও সেহেরির মধ্যে কতটুকু ব্যবধান ছিল? তিনি (রাসূল সা.) বললেন, পঞ্চাশ আয়াত পাঠ করার পরিমাণ। (সহিহ বুখারী)
রাসূলে পাক (সা.) সেহেরি খাওয়াকে বরকতময় বলার অন্যতম কারণ হলো- সেহেরি খাওয়ার ফলে রোজাদার দিনভর উপবাস থাকলেও ইবাদতের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি যোগান নিতে পারে।
রোজার সেহেরির আধ্যাত্মিক ফজিলত হচ্ছে, সেহেরি খাওয়ার উপলক্ষে বান্দা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে ঘুম থেকে উঠে। আর এসময় আল্লাহ পাক দুনিয়ার আসমানে এসে ডেকে ডেকে বলেন, কেউ কি আছো যে আমায় ডাকছে? আমি তার ডাকে সাড়া দেবো। কেউ কি আছে আমার কাছে ক্ষমা চায়? আমি তাকে মাফ করে দেবো। এভাবে ভোর পর্যন্ত তিনি বান্দার রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের জন্য অবিরত ডেকে যান। তাই সেহেরির এসময় অনেক মূল্যবান ও বরকতপূর্ণ।